ইমাম গাযযলী রহ: এর শিশুভাবনা
লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র পারাবত ০৪ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:২৩:৫৪ সকাল
সাইকোলজি কথাটির ব্যুৎপত্তিগত
অর্থ হলো আত্মার শাস্ত্র বা
বিজ্ঞান। সেই মনের বিজ্ঞানে
অন্যতম কালজয়ী চিন্তাবিদ হলেন
বিখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজজালী
(র. তিনি মানুষের প্রতিটি আচার-
আচরণের পেছনের মনস্তাত্বিক
কারণগুলো যুক্তি সহকারে খুব
সুন্দরভাবে তার বিভিন্ন গ্রন্থাদিতে
উপস্থাপন করেছেন৷ এই ধরেন যে,
বর্তমান চাউল্ড সাইকোলজিষ্ট বা
কাউন্সিলরা বলে থাকেন যে শিশুর
মনস্তত্বের অনুধাবন কাঠামোটি
সাধারণত শৈশবের সময়গুলোতে
তৈরি হয়ে যায়৷ ভবিষ্যতে শিশুটি
বাস্তবতার সাথে কতটুকু খাপ খাবে
তার বিলিভ সিষ্টেমগুলো সে
পরিবার থেকে শৈশবেই পেয়ে
থাকে৷ এবার দেখুন ইমাম গাজজালী
র: আজ থেকে প্রায় একহাজার বছর
আগে কি বলে গেছেন৷
১.শিশু যখন বোধ ও উপলব্ধির বয়সে
উপনীত হবে,এবং তার মাঝে অনুভূত
হবে বিবেচনাবোধের সূচনামাত্র তখন
থেকেই তার প্রতি হতে হবে বিশেষ
মনযোগী৷
২.শিশুর মাঝে সর্বপ্রথম জাগ্রত হয় খাদ্য
গ্রহণের আকাঙ্খা৷ তাই খাদ্যাভাসের
শিষ্টাচার হবে তার প্রথম পাঠ৷
ক.তাকে শিখাতে হবে খাবার
গ্রহণের পূর্বে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়৷
খ.পাত্রের সম্মুখ থেকে নিয়ে খেতে
হয়৷
গ.দ্রুত নয়, খেতে হয় ধীরে ধীরে৷
ঘ.খাবার চিবিয়ে খেতে
হয়৷
৩.কথায় কথায় শিশুকে তিরষ্কার করা
উচিত নয়৷
৪. ভাল কাজে শিশুকে উৎসাহিত
করবে এবং সাহস দিবে৷ ভালকাজের
জন্য কখনো কখনো পুরুষ্কৃত করবে৷
৫. সবিশেষ গুরুত্বের সাথে লক্ষ
রাখবে,যেন শিশু গোপনে লুকিয়ে
কোন কাজ করতে অভ্যস্থ না হয়ে পড়ে৷
সেজন্য বাবা-মাকে শিশুদের সাথে
আন্তরিক সুসম্পর্ক রাখতে হবে৷
৬. প্রতিদিন হাঁটা-চলা ও ব্যায়ামের
নির্দেশ দিবে,তাতে শিশুর শরীর ও
মন সতেজ থাকবে৷
৭.দেহ অনাবৃত রাখতে বারণ করবে৷
৮. শিশুর মনে ধন-ধৌলত,বিত্ত-ব
ৈভব,বাহারী পোশাক-আশাক,উত্তম
খাবার ও আসবাবপত্রের গর্ব যেন
কখনো না হতে পারে,সে দিকে সতর্ক
দৃষ্টি রাখবে৷
৮. অন্যের কথা মনযোগের সাথে
শোনার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে৷
৯. পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে
খেলাধুলার সুযোগ করে দিবে৷
কেননা,লাগাতার পড়াশোনা
মেধাকে স্থবির,অকার্যকর ও বিকল
করে দেয়৷
কালোত্তীর্ণ চিন্তাকরা এভাবে
তাদের মেধাকে সর্বোচ্চ কাজে
লাগিয়ে যেভাবে কালজয়ী রচনা
সৃষ্টি করেছেন তা আমাদেরকে স্মরণ
করিয়ে দেয় ইসলাম শুধু আচার সর্বস্ব ধর্ম
নয় ইসলাম একটি জীবন-বিধান৷ ইসলাম
কল্যাণময় জ্ঞানের প্রতিটি বিভাগে
ছড়িয়ে দিতে চায় তার আলোর
রোশনাই৷ পবিত্র কোরআনে বারবার
চিন্তাশীলদের উৎসাহিত করা
হয়েছে৷ বারবার মহাবিশ্বের সৃষ্টির
বিষ্ময় নিয়ে চিন্তকদের
অভিচিন্ত্যনের আহবান জানানো
হয়েছে৷ ইমাম গাযযলীরা সেই
আহবানের পাল্স ধরতে পেরেছিলেন
বলেই উম্মাহকে বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব
দিয়েছিলেন৷ তাই আজ আবার দরকার
নব নব গাযযালী,তাইমিয়া,ইবনুল
কাইয়ুম,হাজার আসকালানী,জালালু
দ্দীন রুমী প্রমুখদের৷
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন